নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পৈতৃক বাড়ির প্রধান ফটকে অজ্ঞাত পরিচয় কিছু ব্যক্তি ‘জয় বাংলা’, ‘হটাও ইউনূস’ ও ‘তুরে দেখে নিব’ এমন রাজনৈতিক বার্তা লিখে রেখে গেছে। গত শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে অবস্থিত ওই বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাড়িটি স্থানীয়ভাবে ‘হাজী মোহাম্মদ দুলামিয়া সওদাগরের বাড়ি’ নামে পরিচিত - যিনি ড. ইউনূসের পিতা। ঘটনার পরপরই হাটহাজারী থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে দেয়ালের লেখা মুছে ফেলে এবং ফটকে নতুন করে রং করে দেয়।
হাটহাজারী থানার ওসি মো. মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, “আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা শনাক্ত করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।” তবে তদন্তের স্বার্থে তিনি অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করেননি।
স্থানীয়দের মতে, এটি কেবল একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডে মানুষের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষেরই বহিঃপ্রকাশ। একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুদি ব্যবসায়ী বলেন, “মানুষ এখন খুব কষ্টে আছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, কাজ নেই, সরকারের নীতি আর বাস্তবতার মধ্যে ফারাক। তাই অনেকেই ক্ষুব্ধ।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, “ফেসবুকে অনেকেই লিখছে- ইউনূসের সরকার মানুষকে হতাশ করেছে। প্রশাসন এখন মানুষের কথা শুনছে না, বরং ভিন্নমতের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, ড. ইউনূস ক্ষমতা গ্রহণের পর এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু এই সময়ের মধ্যে দেশে অর্থনৈতিক সংকট, বেকারত্ব, ভিন্নমত দমন ও সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে। এসব কারণেই জনগণের মধ্যে ক্ষোভ জমে উঠছে, আর হাটহাজারীর ঘটনাটি সেই অসন্তোষেরই প্রতিফলন।
স্থানীয় প্রবীণ মোহাম্মদ হোসেন বলেন, “ইউনূস সাহেবের বাবার বাড়ির ফটকে এমন লেখা, এটা শুধু গ্রামের নয়, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির একটা বার্তা দিচ্ছে।”
যদিও স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাটিকে “বিচ্ছিন্ন” বলছে, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের ক্রমবর্ধমান হতাশা ও বিরক্তির একটি প্রতীকী প্রকাশ।